-
শাবিপ্রবিতে জাফর ইকবালকে ছুরিকাঘাত
-
নরসিংদীতে বাস-মাইক্রো সংঘর্ষে নিহত ১১
- বিনা দোষে ফজলু মিয়ার ২২ বছর কেটে গেল কারাগারে
- সিলেটের জাফলংয়ে সাঁতার কাটতে নেমে দুই ছাত্র নিখোঁজ
- একসঙ্গে ছয় সন্তান প্রসব
- সিলেটের বিশ্বনাথে ফের দু’গ্রামে সংঘর্ষ, আহত ৫০
-
সিলেটে গলা কাটা লাশ উদ্ধার
- অর্ধকিলোমিটার দৌঁড়ানাের পরও শেষ রক্ষা পেল না ব্লগার বিজয়
- অপহৃত স্কুলছাত্রের লাশ পুলিশের বাসায়!
- সিএনজি স্টেশন বন্ধের চিন্তা করছে সরকার : শিল্পমন্ত্রী
-
সিলেট মেডিকেলে ২৪ ঘণ্টায় ৩২ জনের মৃত্যু
-
ইলিয়াস আলীর পিএস ময়নুল আটক
-
পরীক্ষায় অনুপস্থিত থেকেও পাস!
-
সিলেটর মেয়র আরিফুল কারাগারে
-
বিএনপির দুই গুণ, সন্ত্রাস আর মানুষ খুন
-
সালমান শাহর হত্যার বিচারের দাবীতে মাঠে নামছেন তার পরিবার
-
ছাত্রলীগের সংঘর্ষে ছাত্র খুন, শাবি বন্ধ ঘোষণা
-
শাবনুরের বাবা হত্যার আসামী গ্রেপ্তার
-
সিলেটে যুবলীগের সমাবশে ছাত্রলীগের হামলা
-
প্রেম না করার পরামর্শ সমাজকল্যাণমন্ত্রীর
-
সিলেটে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ককটেল বিস্ফোরণ
-
পূণ্যভূমি সিলেট থেকে ১৬০ জন যাত্রী নিয়ে ছাড়লো হজের প্রথম ফ্লাইট
-
সিলেটে টানা বৃষ্টিপাত ও উজানের পাহাড়ি ঢলে বন্যা
-
সাংবাদিকদের অকথ্য গালিগালাজ করলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী
-
লৌহজং চ্যানেলে লঞ্চ ডুবি : ৫ জনের মৃতদেহ উদ্ধার
-
চ্যালেঞ্জিং অ্যাসাইনমেন্টে মালয়েশিয়ায় মাজেদুল নয়ন ও সাজেদা সুইটি
-
ডাচদের প্রথম পেনাল্টিতে গোললাইন পেরিয়েছিল বল?
-
শাবিতে শিক্ষিকাকে উত্ত্যক্ত করায় শিক্ষার্থী বহিষ্কার
-
মালয়েশিয়ায় মোবাইল মার্কেটে প্রতারণার ফাঁদ
-
ডিসি সম্মেলন মঙ্গলবার
মর্নিংসান২৪ডটকম Date:১৭-১০-২০১৫ Time:৬:১৮ অপরাহ্ণ
চট্টগ্রাম অফিস: সিলেটের ফজলু মিয়া। কারা অভ্যন্তরেই কেটে গেছে যার জীবনের ২২টি বছর। তাও আবার বিনা অপরাধে, বিনা দোষে! প্রায় যুুবক বয়সে জেলে যাওয়া ফজলু কারাগার থেকে বের হলেন বৃদ্ধ হয়ে! এই চার দেয়ালের মধ্য থাকতে থাকতে যেন মুক্ত হাওয়ায় বেরিয়ে আসাটা তার বিশ্বাসই হচ্ছে না। এখনো তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। অনেক চেষ্টার পর মুখ খুললেন তিনি। ফজলু বললেন, ‘আমার বিশ্বাসই হচ্ছে না। ভেবেছিলাম হয়তো জেলের মধ্যেই আমার মৃত্যু হবে। তাই এ জন্য জেলকে আপন করে নিয়েছিলাম।’ আর জেল থেকে মুক্ত হওয়ার পর নিজের বাবার ভিটা দেখতেও ইচ্ছা প্রকাশ করেন ফজলু। যদিও সিলেটের দক্ষিণ সুরমার তেতলি ইউনিয়নের ধরাধরপুর গ্রামের মওলা মিয়া ফজলুকে পালকপুত্র হিসেবে বড় করেছেন। বর্তমানে তিনি বেঁচে নেই। আদালত সূত্র অনুযায়ী, ১৯৯৩ সালের ১১ জুলাই ফজলু মিয়াকে সিলেট মহানগরীর কোর্টপয়েন্ট থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় আটক করেন ট্রাফিক পুলিশের তৎকালীন সার্জেন্ট জাকির হোসেন। পরে তাকে মানসিক স্বাস্থ্য আইনের ১৩ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। একাধিকবার জামিন পেলেও জিম্মাদার না থাকায় বেরোতে পারেননি কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্ঠ থেকে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকাকালীন সত্যিই সবার কাছে আপন হয়ে উঠেছিলেন ফজলু মিয়া। কারাগারের বন্দি থেকে শুরু করে কারা কর্মকর্তা সবাই তাকে ‘ফজলু মামা’ বলে ডাকতেন। কয়েক দিন আগে জেল থেকে জামিনে বেরিয়েছেন সিলেট মহানগর ছাত্রদল নেতা লিটন আহমদ। ফজলু মিয়ার সঙ্গে একই ওয়ার্ডে চার মাস ছিলেন তিনি। লিটন আহমদ জানান, ফজলু মিয়াকে কারাগারে সবাই খুব পছন্দ করতেন। সবাই তাকে ফজলু মামা বলে ডাকতেন। যারাই কারাগারে যেতেন, তারা সবাই ধীরে ধীরে ফজলু মামার ভক্ত হয়ে যেতেন। জামিন নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় অনেকেই তাদের কাপড়চোপড় তাকে দিয়ে যেতেন। লিটন আহমদ জানান, ফজলু মামার কাছে অনেক কয়েদিই দোয়া চাইতে আসতেন। তিনি তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে দোয়া করতেন। তবে যাদের চুল লম্বা থাকত, তাদের দোয়া করতেন না তিনি। কারাগারে বিভিন্ন সময় দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাদের নাম ধরে ধরে দোয়া করতেন ফজলু মামা। তিনি আরো জানান, তিনি সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতেন। প্রতিদিন সকালে গোসল করতেন। নিয়মিতভাবে নামাজ আদায় করতেন। ফজর আর জোহরের নামাজের পর উচ্চ স্বরে দরুদ পড়তেন। প্রায় সময়ই বিভিন্নজনের দিয়ে যাওয়া স্যুট-টাই পরে কারাগারের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরে বেড়াতেন। মন চাইলে যে কারো সঙ্গে ষোল গুটি বা তিন গুটি খেলতেন। হেরে গেলে বিমর্ষ হতেন তিনি। কারাগারে সবাই ফজলু মামার গান শোনার জন্য পাগল ছিলেন। সবাই মিলে অনুরোধ করলে গান গাইতেন ফজলু মিয়া। বেশির ভাগ সময়ই ‘সব সখিরে পার করিতে নেবো আনা আনা, তোমার বেলায় নিব সখি তোমার কানের সোনা সখি গো…’ এই গান গাইতেন তিনি। সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘ফজলু মিয়া ছিলেন একজন সহজ সরল প্রকৃতির মানুষ। কারাগারের সবার সঙ্গেই ছিল তার আন্তরিক সম্পর্ক। সবাই তাকে পছন্দ করতেন।’ গত বুধবার আদালত থেকে জামিন পান ফজলু মিয়া। মূলত, তার একসময়ের সহপাঠী সিলেটের দক্ষিণ সুরমার তেতলি ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য কামাল উদ্দিন রাসেল জিম্মাদার হওয়ায় ফজলু মিয়াকে জামিন দেওয়া হয়। কামাল উদ্দিন রাসেল বলেন, ‘ফজলু মিয়াকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি। বছর তিনেক আগে জানতে পারি যে তিনি মারা গেছেন। কিন্তু গত কয়েক দিন আগে জানতে পারলাম যে তিনি কারাগারে আছেন। তাই তার জামিনের জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করি। শেষ পর্যন্ত সিলেট মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতের বিচারক জহুরুল হক চৌধুরী আমার জিম্মায় তাকে মুক্তি দেন। তার জামিনের বিষয়ে সহযোগিতা করেছে বেসরকারি সংস্থা ব্লাস্ট।’ তিনি বলেন, ‘ফজলু মিয়াকে তেতলি ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বাদশা মিয়া নিজের বাড়িতে রাখতে চেয়েছিলেন। তবে তেতলি ইউপি চেয়ারম্যান ওসমান আলী আগ্রহ সহকারে তার জিম্মায় নিয়েছেন ফজলুকে। আমি নিয়মিত খোঁজ রাখছি। আজ শনিবার বিকেলে তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হবে। ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক তার চিকিৎসা চলবে।’ কামাল উদ্দিন রাসেল জানান, ফজলু মিয়া বর্তমানে শান্ত আছেন। কোনো ধরনের উচ্ছৃঙ্খলতা নেই তার মধ্যে। হেঁটে বেড়াচ্ছেন গ্রামে।
১৯৯৩ সালের জুলাইয়ে তিনি জেলে যান, আর বের হন গত ১৪ অক্টোবর।